রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি | ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ | ২:৫০ অপরাহ্ণ
নওগাঁর রাণীনগরে বিল অধ্যুষিত আতাইকুলা গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। এসব কৃষকদের প্রায় ২হাজার বিঘা ফসলি জমি রয়েছে বিল মুনছুরে। কিন্তু ধানের মৌসুমে বিলের জমি থেকে ধান কেটে নিয়ে আসার মতো রাস্তা না থাকায় তাদের উৎপাদন খরচ বেশি হতো। এ থেকে রক্ষা পেতে আতাইকুলাসহ আশেপাশের গ্রামের শতাধিক কৃষক একত্রিত হয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করেছে।
জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার সবচেয়ে বড় বিল বিলমুনছুর। বিলের আশেপাশে রয়েছে প্রায় ২হাজার বিঘা কৃষি জমি। জমিগুলো বছরের প্রায় ৬মাস পানিতে নিমজ্জিত থাকে। তাই কৃষকরা প্রধান ফসল হিসেবে ইরি-বোরো ধান চাষ করে থাকে। এছাড়া বিলের আশেপাশের উঁচু কিছু জমিতে বিভিন্ন রবি ফসলও চাষ করে থাকে। বিলের জমি থেকে ধান বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য আতাইকুলা গ্রামের বিশ্ববাঁধের তজের মোড় থেকে বড়ধর খাল পর্যন্ত একটি রাস্তা থাকলেও বছরের পর বছর রাস্তাটি সংস্কার না করায় তা জমিতে পরিণত হয়েছিলো। রাস্তা থেকেও কৃষক ও গ্রামবাসীরা তা ব্যবহার করতে পারতেন না। এই রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমে ছয় মাস পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে। যার কারণে তা ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পড়ে। মাঠের মধ্যদিয়ে চলাচলের জন্য উপযুক্ত কোন রাস্তা না থাকায় কৃষকদের বেশি মজুরি দিয়ে ধান ঘরে তুলতে হতো।
এতে করে উৎপাদন খরচও হতো দ্বিগুন। শুধু ধান বহনই নয় অন্যান্য কাজের জন্যও গ্রামবাসীরা বিভিন্ন কাজে এই রাস্তাটি ব্যবহার করতে পারতেন না। তাই আতাইকুলা গ্রামের বিশেষ করে কৃষকরা স্থানীয় ভাবে অর্থের যোগান দিয়ে এই রাস্তাটিতে মাটি কেটে উচু করেছে। যেন আসন্ন বোরো মৌসুমে রাস্তাটি ব্যবহার করা যায়। কিন্তু বর্ষা মৌসুম আসার আগেই যদি জনগুরুত্বপূর্ন এই রাস্তার দুই পাশে ব্লক দিয়ে পাঁকা না করলে এটি আবার নষ্ট হয়ে যাবে।
আতাইকুলা গ্রামের রনজিত সাহা, রকেট মন্ডলসহ অনেকেই বলেন, রাস্তা না থাকায় জমি থেকে ধান বহন খুব কষ্ট ও খরচ বেশি হতো। এই চরম দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে আমরা কৃষকরা নিজেদের অর্থ ও শ্রম দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নতুন করে মাটি কেটে তৈরি করেছি। তাই সরকার এবং স্থানীয় সাংসদ মহোদয়ের নিকট আমাদের আকুল আবেদন এই যে রাস্তাটি স্থায়ীভাবে সংরক্ষন করার জন্য তারা দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তানা হলে আবার বর্ষার পানিতে তলিয়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে যাবে। তারা আরো বলেন দেড় কিলোমিটার রাস্তাটি নতুন করে সংস্কার করার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে এলাকাবাসী বার বার ধর্র্ণা দিলেও কোন লাভ হয়নি। শুধু আশ্বাসের বানী শুনিয়েছেন তারা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, গ্রামবাসীরা নিজ উদ্যোগে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করেছে এটি খুব ভালো কাজ। রাস্তাটিকে স্থায়ী করার জন্য পরবর্তি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠবো।
উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মো: শহীদুল হক জানান, রাস্তাটি পরিদর্শন করা হয়েছে। কিন্তু রাস্তাটির নিবন্ধন এখনো হয়নি। তবে রাস্তাটি দ্রুত নিবন্ধন করে এবং স্থানীয় সাংসদের পরামর্শে রাস্তাটি পাকাকরনের জন্য পরবর্তি পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২:৫০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০
seradesh.com | abu sayed